অ্যাক্রোফোবিয়া
আজ অনেকদিন পর মাছ কিনে বাড়ি ফিরছেন রহমান সাহেব। হঠাৎ করেই তিন মাস আগে একদিন তার মনে হলো, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে নিরামিষের বিকল্প নেই। বাসায় ফিরেই স্ত্রী রুবিনাকে অর্ডার, ‘আমি আর মাছ-মাংস খাবো না। তোমরা খেতে চাইলে ড্রাইভারকে বাজারে পাঠিও, আমি টাকা দিয়ে দিবো। কিন্তু আমাকে আর মাছ বাজারে যেতে বলো না’।

রুবিনা অবশ্য মনে মনে বেশ খুশীই হয়েছেন। দুপুরের খাবারটা রহমান আর রুবিনা নিজেদের অফিসেই সেরে নেন। আর বাচ্চাদের স্কুলেও বেশ ভালোই লাঞ্চের ব্যবস্থা রয়েছে, শুধু মাস শেষে বেতনের সাথে নির্দিষ্ট কিছু টাকা অতিরিক্ত দিলেই হয়। আর সকালের খাবার তো সোজা, চার টুকরো করে ব্রেড, কিছু একটা ভাজি, ডিম অমলেট আর সাথে ফলমূল তো আছেই। শুধু রাতের খাবারটাই পরিবারের সবাই মিলে বাসায় বসে খাওয়া হয়। অফিস সেরে বাসায় এসে আবার মাছের আঁশ ছাড়াও, কাটো, রান্না করো, এতো ঝামেলা রুবিনার পোষায় না।

আজ বলতে গেলে মাছ কিনতে একপ্রকার বাধ্যই হলেন রহমান। কাল বিবাহবার্ষিকী। এর আগের বারও ভুলে গিয়ে অল্পের জন্য ঝাঁটার হাত থেকে বেঁচেছেন। এবার ভুলে গেলে তো বটির কোপ। আর সেই ভয়েই এক মাস আগে থেকে মোবাইলে রিমাইন্ডার দিয়ে রেখেছেন। বউয়ের জন্য একটা বেনারসী শাড়ি, আর সোনার গয়না বানিয়েছেন এক সেট। বিয়ের এক দশক পূর্তিতে রুবিনাকে আবার বিয়ের কনে সাজাতে চান রহমান। মাছ-মাংস না খেলে তো পুরো উদযাপনটাই নিরামিষ হয়ে যাবে। তাই মাছ কেনার পর মাংসের দোকানের দিকে পা বাড়ালে তিনি।