About Me
নতুন কিছু না। যে দেশের গল্প, সেই দেশেও আর সব দেশের মতো ছিল একটাই রাজা। আর সুয়োরাণী-দুয়োরাণী
না, রাজার ছিল একটাই রাণী। রাজা আর রাণী মোটেও সুখে ছিলনা। তাদের দুজনের কিছুতেই মিলত
না। কথায় কথায় শুধু ঝগড়া আর ঝগড়া। তাদের ঝগড়ায় ছিল সবাই অতিষ্ঠ। তবে গল্পটা রাজা-রাণীকে
নিয়ে না। রাজা-রাণীর ছিল এক ছেলে, ফুটফুটে না, কুৎসিত দর্শন এক ছেলে। তবে তার ছিল খুব
সুন্দর একটা মন (অন্ততঃ সে নিজে তাই ভাবত)।
রাজপুত্রের নাম বলব না......ইচ্ছে করছে না। গল্পটা সেই রাজপুত্রকে নিয়েই।
রাজার ছেলে হওয়ায় রাজপুত্রের কোন বন্ধু ছিল না। সহজে কেউ তার কাছে ঘেঁষতো না। আর রাজা
যে বদরাগী, কখন কি হয়ে যায় তার ঠিক আছে? তাই বেচারা রাজপুত্র খেলাধুলা তো দূরের কথা,
কথা বলারই লোক পেতো না। এমনটা আর কতোদিন সহ্য হয়। রাজপুত্র একদিন প্রাসাদের কাউকে না
বলে বের হলো ঘুরতে। গন্তব্য--যেদিক দুচোখ যায়। ঘুরতে ঘুরতে সে এসে হাজির হলো এক অদ্ভুত
জায়গায়। পাহাড়ে ঘেরা এক বনে। বনের মধ্যে গাছের পাতার ফাঁক গলে গলে ঢুকে পড়ছে একটু একটু
রোদ। প্রাসাদের চকমকে বাতির আলো দেখে দেখে রাজপুত্র ভুলতেই বসেছিল, প্রকৃতি কেমন হয়।
.....
বাঙ্গালীর আসলেই সিভিক সেন্স খুব কম। নইলে
এমনিতেই ঢাকা শহরে ঘুরতে যাওয়ার মতো জায়গা খুবই কম, তার মধ্যে যা আছে সেগুলোও এতো নোংরা
করে রাখে, যে একবার গেলে আর দ্বিতীয়বার যেতে ইচ্ছে করেনা। এই যেমন ধানমন্ডি লেকের কথাই
ধরা যাক। এতো রোমান্টিক একটা পরিবেশ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর শৈলীর হাত ধরে লেকের পাড়ে
বসে থাকলে কোথায় যায় যানজট আর কোথায় যায় মানুষের কোলাহল…। এখনকার যুগটাই এমন। একসময়
মানুষের ভীড়ে একা থাকাটা দুঃখবোধের চরম পর্যায় বলে বিবেচিত হতো। আর এখন? কোলাহল এতো
মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যে হাজার মানুষের মধ্যে একা থাকতে পারার গুণটা এখন বিশাল
সৌভাগ্যই বলতে হবে।
শৈলীর সাথে কতো মজার সময় কেটেছে এই লেকের
পাড়ে। শৈলীর আবার হাসির রোগ আছে, একবার হাসতে শুরু করলে কোনভাবেই থামানো যায় না, ধমক
দিয়েও না। একবার মনে আছে, কি একটা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে যেনো দুইজন মিলে এতো হাসছিল, যে
আশেপাশের জুটিরা এসে পর্যন্ত অনুরোধ করছিল ‘এট লিস্ট আস্তে’ হাসার জন্য। মনের অজান্তেই
রবিনের মুখে হাসি চলে আসলো, যদিও তার এখনকার অবস্থাটা ঠিক হাসার উপযুক্ত নয়।
উফ আর কতো??? আর কতক্ষণ যে অপেক্ষা করতে
হয় কে জানে। সিগারেট খাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। কিন্তু এই অবস্থায় সিগারেটই বা কতক্ষণ
ভালো লাগে? আশেপাশে সব জুটি হাত ধরে বসে আছে, আর সে হ্যাবলার মতো গত একঘন্টা ধরে একা
একা লেকের পাড়ে অপেক্ষা করছে। সোজা হয়ে বসে থাকতে থাকতে পিঠে ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো।
শৈলী সাথে থাকলে মনেই পড়তো না ব্যাথা-ট্যাথার কথা।
গ্রাম থেকে বাসে চড়ে ব্যাঙ গেলো শহরে,
‘খলিলের ডোবা আমি বেচেছি যে জলিলে,
পিছে পিছে গরু ছোটে, ‘নিয়ে যাও আমারে’।
‘খলিলের ডোবা আমি বেচেছি যে জলিলে,
তুমি কেন পিছে ধাও?’, গরুকে ব্যাঙ বলিলে।
‘ওরে বাবা, জানোনা? সে যে কি কাণ্ড,
দুধে বেশি পানি দিয়ে ভরে দিয়ে ভাণ্ড,
আধা দুধ গোয়ালারে, বাকি দুধ ফাঁকি মেরে,
পড়ে গেছি ধরা ভাই, পিছে মোরে তাড়া করে’।
‘ভাই ভাই বলিস না, আমি তোর সিনিয়র,
জমি নিয়ে কারবার, তুচ্ছ যে তুই চোর,’
ব্যাঙ ভাইয়ের কথা শুনে, গরু পেলো কষ্ট,
বাসে উঠে সকালেই মন হলো নষ্ট,
‘শহর তো গ্রাম নয়, বুঝবে যে ঠ্যালা,
ভালো হতো সাথে যদি থাকে কোন চ্যালা?’
ব্যাঙ ভাবে গরু হলেও কথা তো নয় মন্দ,
‘না হয় তুই ভাইই হলি, ঝগড়া কর বন্ধ’।
কিছু হলেই
কবিরা সব আকাশ নিয়ে পড়বে মেতে,
কেউবা আবার
দরদ নিয়ে ধান কাটতে যাবে ক্ষেতে,
আরে থামো,
গাধা!
সূর্য যখন
গনগনিয়ে, আকাশ তখন ভেজা,
আকাশ নিয়ে
গল্প লেখা এতোই কি আর সোজা?
আকাশ নিয়ে
ধমক খেয়ে, পড়বে এখন চাঁদকে নিয়ে,
কেউ দেখবে
তোমার মুখ আর কেউ বা তাকে ভাজবে ঘিয়ে,
বিজ্ঞানীদের
কথা!
এক পিঠেতে
বরফ যে তার, আরেক পিঠে বালি,
ধূর! চাঁদের
পিছে এতো সময় দিচ্ছো খালিখালি।
চাঁদের
আসল কথা শুনে, নদী শুধু ভাসে মনে,
নৌকা চড়ে
গাইতে গাইতে, চলে যাবো সোঁদরবনে,
একটু থামো
দাদা!
বান হবে
যে বৃষ্টি এলে, নদী যাবে জলে, স্থলে,
গানটি গাওয়া
বাদ দিয়ে যে ফিরবে মায়ের কোলে।
রইলো শুধু
বাকি বন, যেথায় হারিয়ে যাবে মন,
কোথায় যাবে
রাজকণ্যা, কোথায় রাজার ধন,
এ কি দেখি
সাদা!
ওরে বাবা
ডাকটি ছেড়ে, বন-জঙ্গল তুললে ঘাড়ে,
ভূত ধরেছে,
শুনে সবাই, হেসে বাড়ি ফেরে।
বিষয় তো
আর বাকি নাই, কবি আমি কি করে খাই?
বাইরে বিপদ
ভয়ঙ্কর, ঘরে বসেই লিখবো তাই,
আছে তোমার
মাথা?
সব কিছু
শেষ হয়ে গেলেও, হয়নি তো শেষ কবিতা,
তাই কবিতা
নিয়েই লিখে ফেল মনে আসে -যা তা।
কবিতা
আমার ভালো লাগে না মোটেই,
কবিতার
বই পড়িনি একটিও,
আদিখ্যেতা,
ঘ্যানঘ্যান আর ন্যাকামিতে ভরা,
চাঁদ
দেখলে হয়না মনে রুটি,
বাতাসে
আমি লাশের গন্ধ পাইনা,
তাই
কবিতা আমি লিখতে, পড়তে পারিনা।
আকাশে
যখন মেঘ থাকেনা, তাকিয়ে তখন ভাবি,
না
না, ভুল ভেবোনা, দেখি না তোমার ছবি,
দিনটা
আজ খুব খারাপ যাবে,
যানজট
আর গরম রোদে,
পুড়ে
পুড়ে অফিস গিয়ে খাবো বসের ঝাড়ি,
তবুও
আমার ছন্দ মনে পড়ে না,
তাই
কবিতা আমি লিখতে, পড়তে পারিনা।
বৃষ্টি
যখন কান্না পোহায়, জলে ডুবে চাকা,
দেখিনা
তো মুখটা তোমার ঢেউয়ে ঢেউয়ে আঁকা,
এটা
তো খুব মন্দ হলো,
কাদায়
শার্টটা হলো কালো,
অফিস
যাবে, যেতেই হবে, এ তো মামা বাড়ি না,
তাই
কবিতা আমি লিখতে, পড়তে পারিনা।